20 C
Dhaka
আজঃ বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

Live TV

মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা, সনদ বাতিল চেয়ে ২ জনের আবেদন

 

আই টিভি বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক:

মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা বনে যাওয়া দুজন তাদের সনদ বাতিলের আবেদন করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীকের কাছে এ আবেদন জমা দেন। আবেদনে তারা অনৈতিক কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। একই সঙ্গে এই সনদ নিতে যারা উৎসাহিত করেছেন তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। স্বেচ্ছায় সনদ বাতিলের দুটি আবেদন পাওয়ার বিষয়টি যুগান্তরের কাছে নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দুজন আবেদন করেছেন। আমরা এ দুটি আবেদন গ্রহণ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে গেজেটভুক্ত তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যেহেতু তারা স্বেচ্ছায় সনদ বাতিলের আবেদন করেছেন সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। একইভাবে সনদ বাগিয়ে নেওয়া অন্যান্য অমুক্তিযোদ্ধারাও স্বেচ্ছায় সনদ বাতিলের আবেদন করলে তারাও শাস্তির বাইরে থাকবেন। অন্যথায় ভুয়া সনদধারী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্বেচ্ছায় সনদ বাতিলের আবেদনকারীদের বিষয়ে শিগগিরই একটি অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলেও জানান তিনি। ১১ ডিসেম্বর সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান সমুন্নত রেখে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্তের কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কারা অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, তারা যেন স্বেচ্ছায় সনদ বাতিল করে চলে যান। যদি যান তাহলে তারা (ইনডেমনিটি) সাধারণ ক্ষমা পাবেন। আর যদি সেটা না হয়, প্রতারণার জন্য তাদের অভিযুক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করব।’

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়েই আবেদন করেছেন বলে লিখিতভাবে উল্লেখ করেছেন আবেদনকারীরা। আবেদনকারী দুজনের একজন ভারতের ‘লাল মুক্তি বার্তা’র তালিকাভুক্ত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এই লাল মুক্তি বার্তা থেকেও তার নাম বাতিল চেয়েছেন।

এদিকে আবেদনকারীদের সামাজিক সুরক্ষা ও ব্যক্তি সম্মান ঠিক রাখতে স্বেচ্ছায় সনদ বাতিলের আবেদনকারীদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে সচিব ইসরাত চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, আবেদনকারীদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ পেলে তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবেন। অন্যরা সনদ বাতিলে নিরুৎসাহিত হবেন। অন্যান্য অমুক্তিযোদ্ধারা যাতে নির্বিঘ্নে আবেদন করতে পারেন সেজন কারও নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না, ভবিষ্যতেও করা হবে না।

জানা গেছে, দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার আরেক দপ্তর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তার হাতে আবেদন জমা দেওয়া হয়। এরমধ্যে একজন সরাসরিও আরেকজন মাধ্যম দিয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনে তারা অমুক্তিযোদ্ধা থেকে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হলেন তা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেছেন। নতুন বাংলাদেশে এখন তারা অপরাধবোধ থেকেই তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের আবেদন করেছেন। আবেদনে তারা জাতির কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

সম্প্রতি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, বহু অভিযোগ আছে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়ে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। আমি মনে করি এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। এটা অনেক বড় অপরাধ। অপেক্ষমাণ আদালতের আদেশে এটা যখন চিহ্নিত হবে তখন এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাতিল হবেন এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, অমুক্তিযোদ্ধা যারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন তাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলছে। আমরা খুব দ্রুত তাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে যেতে পারব আশা করছি।

নীল তালিকা, লাল তালিকা, ভারতীয় তালিকাসহ নানা ধরনের মুক্তিযোদ্ধা তালিকার বিড়ম্বনার কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অনুরাগের বশে, আত্মীয়তার বশে কিংবা অন্য কোনো প্রলোভনে অনেককে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে একটু তো সময় লাগবেই। তবে যারা স্বেচ্ছায় তাদের সনদ বাতিল করবেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। অন্যথায় তালিকা ধরে ধরে সনদ বাতিল করে তাদের ভোগ করা সব সুযোগ-সুবিধা ফেরত নেওয়াসহ শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।

এ ধরনের আরো খবরঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরাঃ

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

EYE TV Bangla

সাম্প্রতিক খবরঃ