চীনে জন্মহার রেকর্ডসংখ্যক কমেছে। এতে বয়স্কদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ক্রমহ্রাসমান জন্মহার মোকাবিলায় ভূমিকা পালনের জন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন সরকার।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, নারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং তাদেরকে অবশ্যই ‘পরিবারের নতুন ট্রেন্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সোমবার অল চায়না উইমেনস ফেডারেশনের নতুন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে শি জিনপিং নারীদের ভূমিকার ওপর জোর দেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ তথ্য জানিয়েছে।
শি জিনপিং বলেন, ‘নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়াটা কেবল নারীর নিজের উন্নয়নের সাথে জড়িত নয়, বরং একইসঙ্গে এটি ‘পারিবারিক সম্প্রীতি, সামাজিক সম্প্রীতি, জাতীয় উন্নয়ন ও জাতীয় অগ্রগতির’ সাথে সম্পর্কিত। বিয়ে ও সন্তান জন্মদানের একটি নতুন সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিয়ে, সন্তানের জন্ম ও পরিবার সম্পর্কে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গির দিকনির্দেশনাকে শক্তিশালী করা জরুরি।’
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সন্তান লালনপালনে উচ্চ ব্যয়, ক্যারিয়ার গড়ায় প্রতিবন্ধকতা, লিঙ্গ বৈষম্য এবং বিয়েতে অনীহা অনেক তরুণ চীনা নারীকে সন্তান ধারণ থেকে বিরত রাখছে।
জন্মহার বিয়ের হারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। কারণ, চীনের সরকারি নীতিগুলো অবিবাহিত নারীদের সন্তান ধারণ করার বিষয়টি কঠিন করে তোলে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৯৬১ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশটির জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
চীন সরকার জন্মহার বাড়ানোর জন্য গত দুই বছরে দেশজুড়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথাগত বিয়ের খরচ কমানো হয়েছে। কর্মীদের বিয়ের জন্য ছুটি দেওয়া হচ্ছে। দম্পতিদের সন্তান ধারণের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সন্তানের বয়স তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত অভিভাবকদের ভর্তুকি দিচ্ছে।
জনসংখ্যার বৃদ্ধি কমাতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতিমালা চালু করেছিল চীন। এ নীতির কঠোর প্রয়োগের ফলে জন্মহার অস্বাভাবিকভাবে কমে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে চীন সরকার বিতর্কিত এক সন্তান নীতিমালার বিপরীতে দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। ২০২১ সালে অস্বাভাবিক নিম্নমুখী জন্মহার থেকে মুক্তির পথ হিসেবে ‘তিন সন্তান নীতি’ কার্যকর করে চীন। এরপরও পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
কমিউনিস্ট পার্টির পরিবার পরিকল্পনা নীতির বিশেষজ্ঞ স্টিভেন মোশার ভিওএকে বলেছেন, চীন বাচ্চা জন্মদানের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে।