ষাটের দশকের বিখ্যাত ব্যান্ড দ্য বিটলসের জনপ্রিয় একটি গান হলো, ‘মানি ক্যান নট বাই মি লাভ’ অর্থাৎ টাকা আমাকে ভালোবাসা কিনে দিতে পারে না।
কিন্তু কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার তথ্য বলছে, যে দম্পতি একে অপরের সঙ্গে যত বেশি আর্থিক সম্পর্ক দৃঢ় করে তুলতে পারবে, তাদের সম্পর্কটি টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষণাপত্রটি পারসোনালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন এই গবেষণা থেকে জানা গেছে, যে দম্পতিদের জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তারা তুলনায় অন্যান্যদের থেকে বেশি সুখী।
এই গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন অন্তত ৬২ শতাংশ দম্পতি একই উপায়ে অর্থ খরচ করেন। যাদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের সম্পর্কও টিকে থাকে অনেক বেশিদিন ধরে।
এছাড়া, যেসব দম্পতিরা একইসঙ্গে নিজেদের ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক ব্যবস্থার দেখভাল করেন, তারা নিজেদের সম্পর্ক নিয়েও বেশি খুশি। শুধু তাই নয়, তারা অর্থ নিজেদের মতো খরচ করলেও তা মেপে করেন। বেহিসেবি ভাবে নয়। খরচের মাপেও জীবনের মানে খুঁজে নিতে পারেন তারা।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জো গ্ল্যাডস্টোন বলেন, আমরা হাজার হাজার দম্পতিকে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং তাদের উভয়ের লেনদেনের তথ্য দেখেছি, সেইসঙ্গে তাদের সম্পর্কের সন্তুষ্টির বিষয়টি বুঝতে বহু বছর ধরে জরিপ করেছি। আমরা যা পেয়েছি তা হলো, যেসব দম্পতির যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের সম্পর্ক টিকে থাকে অনেক বেশি দিন ধরে।
তিনি বলেন, এ ধরনের দম্পতি দাম্পত্য সম্পর্কে বেশি সুখী থাকে। তারা অর্থটাও ভিন্নভাবে ব্যয় করে, যার মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসে প্রাধান্য বেশি থাকে এবং আনন্দ, বিনোদনের জিনিসগুলোতে কম খরচ করে।
অধ্যাপক গ্ল্যাডস্টোন এটাও উল্লেখ করেন যে, দাম্পত্য সম্পর্ক দীর্ঘদিন টিকে থাকার ক্ষেত্রে অনেকগুলো ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিষয়টি একটি মাত্র। অন্যান্য কারণও দম্পতিদের দীর্ঘমেয়াদি সুখ নির্ধারণ করে। একে অপরের সঙ্গে পরস্পর কতটা নির্ভরশীল বোধ করে, একে অপরের উপর কতটা নির্ভর করে, আয়ের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কের সন্তুষ্টির পূর্বাভাস দেয়। কারণ অর্থ নিয়ে টেনশন করতে হচ্ছে না, তর্কে জড়াতে হচ্ছে না। কিন্তু এসবের বাইরে আমরা যেটা দেখতে পেয়েছি যে, একসঙ্গে টাকা জমা করাটা দাম্পত্য সম্পর্কের সুখের পূর্বাভাস বলে মনে হয়।
তথ্যসূত্র: ইয়াহু মানি।