আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গ্রিসের পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসাবে ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক ও বর্তমানে রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রাহক কিম্বারলি গিলফোয়েলকে মনোনীত করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এছাড়া তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হিসাবে ২০১৬ সালে ট্রাম্পের উদ্বোধনী কমিটির চেয়ারম্যান টম বারাককে মনোনীত করেছেন তিনি। মঙ্গলবার তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। বুধবার এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেছেন, অনেক বছর ধরে গিলফোয়েল তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মিত্র। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা থেকে শুরু করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উদ্ভাবনের মতো নানা বিষয়ে গ্রিসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য তিনি পুরোপুরি উপযুক্ত।
কিম্বারলি গিলফোয়েল ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন। অবশ্য ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনে মনোনীত হিসাবে গুইলফয়েলই প্রথম মানুষ নন। এর আগে নভেম্বরে, ট্রাম্প তার জামাতা জ্যারেড কুশনারের বাবা চার্লস কুশনারকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত হিসাবে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দেন।
পাশাপাশি তিনি তার কনিষ্ঠ কন্যা টিফানি ট্রাম্পের শ্বশুর মাসাদ বুলোসকে আরব ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগের পরিকল্পনা করেন। অন্যদিকে, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হিসাবে টম বারাককে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। টম তার দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং একজন প্রাইভেট ইকুইটি এক্সিকিউটিভ।
তার বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এজেন্ট হিসাবে বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। ২০২২ সালে তিনি নয়টি অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। ট্রাম্প বলেছেন, টম একজন সম্মানিত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি। এই পদে তার নিয়োগ যথাযথ হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এদিকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনাকে ঘিরে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন সিনেটররা। মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় এ বিষয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
অভিবাসন নিয়ে ডেমোক্রেটদের বক্তব্য, ট্রাম্পের পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তবে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি বলেছে, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে চাচ্ছেন তিনি। বুধবার দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জাতীয় সংকট ঘোষণা করে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে ফেরত পাঠানোর কথা চিন্তা করছেন ট্রাম্প।
নিজ দেশের সহিংসতা থেকে পালিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয়ে আছেন তাদেরও ফেরত পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। তবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।
এ বিষয়ে আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের কর্মকর্তা অ্যারন মেলনিক বলেছেন, ‘ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিকে বিরাট হুমকির মুখে দাঁড় করাবে। অনেক পরিবার ভেঙে যাবে। এমনকি মার্কিন সমাজের মূল ভিত্তি নড়ে যেতে পারে।’
মেলনিকের আরও বলেছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হবে। এই ব্যয় দেশের বার্ষিক জিডিপির ৬ দশমিক ৮ শতাংশের সমান। এতে দেশে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে।